আপনার স্কিনকেয়ার রুটিনকে আপগ্রেড করুন প্রিবায়োটিকের সাথে!
স্কিনকেয়ারে প্রিবায়োটিক একটি পরীক্ষিত ও কার্যকরী উপাদান হিসেবে পরিচিত। প্রিবায়োটিকের মাধ্যমে ত্বকের সারফেসে থাকা হেলদি ব্যাকটেরিয়াগুলো যেন প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়, তা নিশ্চিত করা হয়। এতে করে স্কিন ব্যারিয়ার সুরক্ষিত থাকার পাশাপাশি স্কিনের পি এইচ লেভেলও নিয়ন্ত্রণে থাকে। যদি আপনি আপনার স্কিনকেয়ার জার্নিতে অর্গানিক স্কিনকেয়ার ইনগ্রেডিয়েন্ট অ্যাড করতে চান, তাহলে প্রিবায়োটিক আপনার পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন। আজকের ফিচারে থাকছে প্রিবায়োটিক কী এবং আমাদের ত্বকের জন্য এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
প্রিবায়োটিক সম্পর্কে জানুন
প্রিবায়োটিক হলো বিশেষ এক ধরনের প্ল্যান্ট ফাইবার, যা আমাদের স্কিনে থাকা ভালো বা উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোর খাদ্য উৎস হিসেবে পরিচিত। এই উপাদানটির কাজ হলো স্কিনে থাকা মাইক্রোবায়োম যা স্কিন ব্যারিয়ারের একটি অংশ, সেটির হেলথ এবং নারিশমেন্ট মেনটেইন করা। প্রিবায়োটিক স্কিন ব্যারিয়ার রিস্টোর অথবা মেনটেইন করতে বিশেষ উপযোগী। তাছাড়াও স্কিন হেলদি ও ইয়ুথফুল রাখার জন্যও প্রিবায়োটিক একটি বেস্ট অপশন।
স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের জন্য সব থেকে ভালো প্রিবায়োটিক উপাদানগুলো হলো জাইলিটোল, রেমনোস, গ্লুকোম্যানেন, ইনিউলিন ইত্যাদি। এই উপাদানগুলো স্কিন ইরিটেশন কমায়, ইনফ্ল্যামেশন দূর করে এবং ক্ষতিকর ইউভি রেডিয়েশন থেকে স্কিনকে রক্ষা করে। স্কিনকেয়ারের ক্ষেত্রে প্রিবায়োটিক সমৃদ্ধ বডিওয়াশ এবং ফেইসওয়াশ ব্যবহার ক্লেনজিংয়ের পাশাপাশি স্কিনের ময়েশ্চার ও পি এইচ লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়া প্রিবায়োটিক ইনফিউজড সিরাম অ্যান্টি-এজিংয়ের কাজও করে।
স্কিনকেয়ারে প্রিবায়োটিক কেন গুরুত্বপূর্ণ?
ত্বক আমাদের দেহের সবচেয়ে বড় অর্গান। ত্বকে থাকা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি মাইক্রোঅর্গানিজমকেই মাইক্রোবায়োম বলে। এটি আমাদের ত্বকের উপর একটি লেয়ার ক্রিয়েট করে। মজার বিষয় হলো, আমাদের প্রত্যেকের ত্বকের মাইক্রোবায়োম ভিন্ন ভিন্ন। অর্থাৎ আমাদের প্রত্যেকের ত্বকের সারফেসে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোও ভিন্ন ভিন্ন।
এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন, তাহলে কি ভিন্ন ভিন্ন মাইক্রোবায়োমের প্রোপার কেয়ারের জন্য ভিন্ন ভিন্ন উপাদানের প্রয়োজন হবে? এখানেই মূলত প্রিবায়োটিক একটি ইউনিভার্সাল চ্যাম্প! সবার স্কিনের মাইক্রোবায়োম টাইপ ভিন্ন হলেও প্রিবায়োটিক একটি ইউনিভার্সাল সাপোর্ট সিস্টেমের মতো কাজ করে। এটি ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রাখে। সেই সাথে ড্রাইনেস কমিয়ে ত্বককে করে প্রাণবন্ত এবং উজ্জ্বল।
প্রিবায়োটিকের আছে দারুণ কিছু স্কিন বেনিফিটস
এখন আমরা জেনে নিবো প্রিবায়োটিকের কিছু স্কিন বেনিফিটস নিয়ে।
স্কিন ব্যারিয়ার প্রোটেক্টর
স্কিন হুট করে অনেক সেনসিটিভ হয়ে গিয়েছে, রোদে গেলে খুব বেশি রিয়্যাক্ট করছে অথবা কোনো মাইল্ড প্রোডাক্ট ব্যবহারেও ভীষণ ব্রেকআউট হচ্ছে। ঠিক এরকমটাই যদি হয়ে থাকে আপনার স্কিন কন্ডিশন, তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার স্কিন ব্যারিয়ার দুর্বল হয়ে গিয়েছে। এখন আপনাকে ঝুঁকতে হবে প্রিবায়োটিক স্কিনকেয়ারের প্রতি। কেন জানেন? কারণ স্কিনকেয়ারে প্রিবায়োটিক এর কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম কাজটি হলো স্কিন ব্যারিয়ারকে রক্ষা করা। প্রিবায়োটিক স্কিনের ব্যারিয়ার শক্তিশালী করে তোলে। এর ফলে স্কিনের সারফেসে শক্তিশালী শিল্ড তৈরি হয়, যা ইউভি ড্যামেজ থেকে শুরু করে সবরকম স্কিন পল্যুশন থেকে আমাদের স্কিনকে সার্বিকভাবে রক্ষা করে।
একনে ব্রেকআউট কন্ট্রোলার
একনে মূলত আমাদের স্কিনে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়ে থাকে। যদি আপনার স্কিন অনেক বেশি একনেপ্রন হয়ে থাকে, তাহলে প্রিবায়োটিক আপনার জন্য অল টাইম সেভিয়ার হয়ে উঠবে। কেননা, প্রিবায়োটিকে আছে এমন কিছু প্রোপার্টিজ যা স্কিন ইনফ্ল্যামেশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং স্কিনে একনে ব্রেকআউটের ঝুঁকি কমায়।
স্কিনের হাইড্রেশন এজেন্ট
স্কিন ড্রাই হয়ে থাকলে কিন্তু আমাদের মোটেই ভালো লাগে না তাইনা? তাছাড়াও ড্রাই স্কিনে মেকআপ করাটা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। প্রিবায়োটিকে আছে ময়েশ্চার রিটেইনিং ফর্মুলা, যা আমাদের স্কিনের মাইক্রোবায়োমকে হেলদি ও প্রোপারলি হাইড্রেটেড রেখে স্মুথ স্কিন পেতে হেল্প করে।
ইয়াংগার লুকিং স্কিন
রেডিয়্যান্ট ও ইয়ুথফুল স্কিন কে না চায়? বয়স যতই বাড়ুক না কেন, আমরা চাই আমাদের স্কিন যেন সবসময় হেলদি ও গ্লোয়িং থাকে। প্রিবায়োটিকের এই ক্ষমতাও বেশ প্রখর! কীভাবে? প্রিবায়োটিক আমাদের স্কিনের পেপটাইড প্রোডাকশনের সাপোর্ট সিস্টেম হিসেবে কাজ করে। এই পেপটাইড স্কিনের সারফেসকে হেলদি লুকিং রাখে। এছাড়াও এটি স্কিনের ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি স্কিনে ফাইন লাইনস ও রিংকেলস ভিজিবল হওয়াও প্রিভেন্ট করে।
স্কিন প্যাসিফাইয়ার
স্কিনের পি এইচ ব্যালেন্স যখন ঠিক থাকেনা, তখন আমাদের স্কিন প্রচুর সেনসিটিভ হয়ে পড়ে। যার ফলে স্কিনে রেডনেস, ইরিটেশন অথবা র্যাশ দেখা দিতে পারে। প্রিবায়োটিক এক্ষেত্রে স্কিনের প্যাসিফাইয়ার হিসেবে কাজ করে স্কিনের সেনসিটিভিটি প্রিভেন্ট করে। বিশেষ করে সুগার ড্রাইভড প্রিবায়োটিকে রয়েছে স্কিন সুদেনিং প্রোপার্টিজ, যা আমাদের স্কিনের ইরিটেশন কমাতে খুবই কার্যকরী।
স্কিনের মাইক্রোবায়োম রিস্টোরার
স্কিনে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া আমাদের বিভিন্ন স্কিন ইস্যুজ , যেমন, একজিমা, একনে ইত্যাদির জন্য দায়ী। এই ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়ার বিস্তার তখনই হয় যখন স্কিনের মাইক্রোবায়োম ইমব্যালেন্সড হয়ে যায়। প্রিবায়োটিক মূলত স্কিন মাইক্রোবায়োম রিস্টোরেশনে কাজ করে, যাতে করে স্কিনের জন্য বেনিফিশিয়াল ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায় এবং মাইক্রোবায়োমের ব্যালেন্স ফিরে আসে। আর আমরা পাই হেলদি স্কিন।
No comments